“হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আমার যেসব গুনাহ…

“হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আমার যেসব গুনাহ আপনি আমার চেয়ে অধিক জানেন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার ভুল-ত্রুটি, আমার ইচ্ছাকৃত গুনাহ ও আমার অজ্ঞতা এবং আমার উপহাসমূলক গুনাহ আর এ রকম গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন যেসব গুনাহ আমি আগে করেছি ও পরে করেছি এবং যা আমি গোপন করেছি ও প্রকাশ্যে করেছি। আপনিই অগ্রবর্তী করেন, আপনিই পশ্চাদবর্তী করেন এবং আপনিই সব বিষয়োপরি সর্বশক্তিমান”।

আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ দু’আ করতেন: “হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আমার যেসব গুনাহ আপনি আমার চেয়ে অধিক জানেন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার ভুল-ত্রুটি, আমার ইচ্ছাকৃত গুনাহ ও আমার অজ্ঞতা এবং আমার উপহাসমূলক গুনাহ আর এ রকম গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন যেসব গুনাহ আমি আগে করেছি ও পরে করেছি এবং যা আমি গোপন করেছি ও প্রকাশ্যে করেছি। আপনিই অগ্রবর্তী করেন, আপনিই পশ্চাদবর্তী করেন এবং আপনিই সব বিষয়োপরি সর্বশক্তিমান”।

[সহীহ] [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]

الشرح

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যাপক দোয়ার মধ্যে একটি ছিল, তাঁর এই কথাটি: “হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ” এবং আমার পাপ এবং “আমার অজ্ঞতা” এবং আমার অজান্তে যা আমার থেকে সংঘটিত হয়েছে। “আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি” এবং আমার ত্রুটি ও আমার সীমালঙ্ঘন। (এবং আমার যেসব গুনাহ আপনি আমার চেয়ে অধিক জানেন) হে আল্লাহ আপনি জানেন, অথচ আমি তা ভুলে গেছি। “হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার ভুল-ত্রুটি, আমার ইচ্ছাকৃত গুনাহ” এবং যা আমার থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে এবং পাপ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও প্রকাশ পেয়েছে। (এবং আমার অজ্ঞতা এবং আমার উপহাসমূলক গুনাহ) এবং ঠাট্টাচ্ছলে যা প্রকাশ পেয়েছে এবং এই দুই হালতে যা আমার থেকে সংঘটিত হয়েছে। (আর এ রকম গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে), যেমন যেসব পাপ ও দোষগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন যেসব গুনাহ আমি আগে করেছি” অতীতে “এবং যা আমি পরে করব” ভবিষ্যতে। “এবং আমি যা গোপন করেছি” ও লুকিয়েছি “এবং আমি যা প্রকাশ করেছি” ও প্রদর্শন করেছি। “আপনিই অগ্রবর্তী করেন, আপনিই পশ্চাদবর্তী করেন” আপনি যাকে চান আপনার সন্তুষ্টির তাওফিক দান করে তাকে আপনার রহমতের নিকটবর্তী করেন। আপনি যাকে চান আপনার লাঞ্ছনা দিয়ে তাকে পশ্চাদবর্তী করেন। কাজেই আপনি যাকে পশ্চাতে করবেন তাকে কেউ অগ্রবর্তী করতে পারে না এবং আপনি যেসব বিষয় অগ্রবর্তী করবেন তা কেউ পশ্চাতবর্তী করতে পারে না। “এবং আপনিই সব বিষয়োপরি সর্বশক্তিমান”, পরিপূর্ণ ক্ষমতা ও পরিপূর্ণ ইচ্ছার মালিক, যা চান তাই করতে পারেন।

فوائد الحديث

এই দোয়ার ফজিলত এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করে এর প্রতি আগ্রহী হওয়া।

অপচয় করা নিষেধ এবং অপচয়কারী শাস্তির মুখোমুখী হবেন।

আল্লাহ তা‘আলা মানুষ সম্পর্কে তার নফস থেকে বেশী জানেন। কাজেই তার বিষয়গুলো আল্লাহর নিকট সোপর্দ করা। কারণ সে না জেনে ভুল করতে পারেন।

মানুষকে কখনো তার উপহাসের ওপর পাকড়াও করা হবে যেমন তার ইচ্ছাকৃতের ওপর পাকড়াও করা হয়। তাই একজন ব্যক্তিকে তার রসিকতার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

ইবনু হাজার আসকালানী বলেন: আমি এর কোন সনদে এই দোয়ার জায়গাটি দেখেনি, তবে এর অধিকাংশের শেষে রয়েছে... তিনি রাতের সালাতে এটি বলতেন এবং এটিও বর্ণিত হয়েছে যে তিনি সালাতের শেষে বলতেন। তিনি সালামের আগে নাকি পরে বলতেন সে সম্পর্কে বর্ণনায় মতভেদ আছে? উভয়টি বর্ণিত হয়েছে।

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ইস্তেগফার করতে ভুল করেন? বলা হয়েছে যে, তিনি এটি নম্রভাবে এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের সাথে বলেছেন, বা তিনি পূর্ণতা ছুটে যাওয়া এবং উত্তম ত্যাগ করাকে পাপ গণ্য করেছেন, বা তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যা ভুল থেকে হয়েছে, বা নবুওয়তের আগে যা ঘটেছে; এবং বলা হয়েছে: ইস্তেগফার (ক্ষমা চাওয়া) একটি ইবাদত যা অবশ্যই করা উচিত, ক্ষমার জন্য নয়, বরং একটি ইবাদত হিসাবে; এবং বলা হয়েছে: এটি তার উম্মতের জন্য একটি সতর্কবাণী এবং একটি শিক্ষা; যাতে তারা নিরাপদ বোধ না করে এবং ক্ষমা চাওয়া ত্যাগ না করে।

التصنيفات

কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দো‘আসমূহ