“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজেব ক’রে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত…

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজেব ক’রে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত ক’রে দিয়েছেন।”

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক মিসকীন মহিলা তার দু’টি কন্যাকে (কোলে) বহন ক’রে আমার কাছে এল। আমি তাকে তিনটি খুরমা দিলাম। অতঃপর সে তার কন্যা দু’টিকে একটি একটি ক’রে খুরমা দিল এবং সে নিজে খাবার জন্য একটি খুরমা মুখ-পর্যন্ত তুলল। কিন্তু তার কন্যা দু’টি সেটিও খেতে চাইল। সুতরাং মহিলাটি যে খেজুরটি নিজে খেতে ইচ্ছা করেছিল, সেটিকে দু’ভাগে ভাগ ক’রে তাদের মধ্যে বন্টন ক’রে দিল। সুতরাং তার (এ) অবস্থা আমাকে মুগ্ধ করল। তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট মহিলাটির ঘটনা বর্ণনা করলাম। নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজেব ক’রে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত ক’রে দিয়েছেন।”

[সহীহ] [এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

মুমিনদের মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন যে, একজন দরিদ্র মহিলা দুটি কন্যা কোলে নিয়ে তার কাছে কিছু প্রার্থনা করল। তিনি তাকে তিনটি খেজুর খেতে দিলেন। সে তার দুই মেয়েকে একটি করে খেজুর দিল আর নিজে খাওয়ার জন্য মুখে একটি খেজুর তুলে নিল। তখন তার দুই মেয়ে সে যেটি খাওয়ার ইচ্ছে করেছিল সেটি তার কাছে চাইল, তাই সে তাদের মধ্যে খেজুরটি ভাগ করে দিল। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তার অবস্থা দেখে মুগ্ধ হলেন এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তার আচরণের কথা উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন: এই খেজুর এর বিনিময়ে আল্লাহ তাকে জান্নাত অবধারিত করে দিয়েছেন, অথবা এর মাধ্যমে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।

فوائد الحديث

সদকার ফজিলত, তা যদি সামান্যও হয়, এটি একজন মুমিনের তার রবের প্রতি ঈমানের আন্তরিকতা এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি ও অনুগ্রহের প্রতি আস্থার প্রমাণ।

সন্তানদের প্রতি মায়ের তীব্র মমতা এবং তাদের বিনষ্ট যাওয়ার ব্যাপারে তাদের ভয়।

আত্মত্যাগ, সন্তানদের প্রতি করুণা, কন্যাদের প্রতি বেশী দয়া ও কোমলতার ফজিলত এবং এটি জান্নাতে প্রবেশ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি কারণ।

নগণ্য হওয়ার কারণে অল্প পরিমাণ দান করা নিষিদ্ধ নয়। বরং, দানকারীর উচিত তার যা কিছু দান করা সহজ হয় তা দান করা, তা কম হোক বা বেশি।

এতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘরের অবস্থা এবং তিনি এবং তাঁর পরিবার কীভাবে জীবনযাপন করতেন তা বর্ণনা করা হয়েছে। তাদের বাড়িতে এক বা তিনটি খেজুর ছাড়া আর কিছুই খাওয়ার ছিল না।

التصنيفات

সৎকাজের ফযীলত