অযু

1- ‘উসমান ইবনু ‘আফফান -এর মুক্ত করা দাস হুমরান হতে বর্ণিত। সে দেখেছে, ‘উসমান ইবনু আফফান উযূর পানি নিয়ে ডাকলেন। তারপর তিনি পানির পাত্র হতে তাঁর উভয় হাতের উপর ঢাললেন এবং তাঁর দুই হাত তিনবার ধুলেন। অতঃপর তাঁর ডান হাত পানিতে ঢুকালেন। অতঃপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন ও নাক ঝাড়লেন। অতঃপর তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ও তাঁর উভয় হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন, অতঃপর তাঁর মাথা মাসেহ করলেন। অতঃপর প্রত্যেক পা তিনবার ধুলেন; তারপর বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার এই উযূর ন্যায় উযূ করতে দেখেছি। এবং তিনি বলেছেন, “@যে ব্যক্তি আমার এই উযূর ন্যায় উযূ করল, তারপর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করল তাতে সে তার মনে কনো কিছু উদয় করলো না, আল্লাহ্ তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন*”।

5- এক সময় আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মক্কা থেকে মদীনায় ফিরছিলাম। পথিমধ্যে আমরা এক পানির স্থানে পৌঁছলে, কিছু সংখ্যক লোককে আসরের সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করতে দেখলামল। এরা ওযু করতে তাড়াহুড়া করল। আমরা তাদের কাছে পৌঁছে দেখলাম তাদের পায়ের গোড়ালিসমূহ এমনভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যে, তাতে পানি পৌঁছেনি। এ দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, @“পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য আগুনের শাস্তি। তাই তোমরা পূর্ণমাত্রাই ওযু করো।”

6- «إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فَلْيَجْعَلْ فِي أَنْفِهِ ثُمَّ لِيَنْثُرْ، وَمَنِ اسْتَجْمَرَ فَلْيُوتِرْ، وَإِذَا اسْتَيْقَظَ أَحَدُكُمْ مِنْ نَوْمِهِ فَلْيَغْسِلْ يَدَهُ قَبْلَ أَنْ يُدْخِلَهَا فِي وَضُوئِهِ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ لاَ يَدْرِي أَيْنَ بَاتَتْ يَدُهُ». “@তোমাদের মধ্যে কেউ যখন অযু করে তখন সে যেন নাকে পানি দেয়, এরপর যেন নাক ঝেড়ে নেয়। আর যে ইস্তিঞ্জা করে সে যেন বেজোড় সংখ্যক ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করে।* আর তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জাগে তখন সে যেন অযুর পানিতে হাত ঢুকানোর আগে তা ধুয়ে নেয়; কারণ তোমাদের কেউ জানে না যে, ঘুমন্ত অবস্থায় তার হাত কোথায় থাকে।” মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে: «إِذَا اسْتَيْقَظَ أَحَدُكُمْ مِنْ نَوْمِهِ فَلَا يَغْمِسْ يَدَهُ فِي الْإِنَاءِ حَتَّى يَغْسِلَهَا ثَلَاثًا، فَإِنَّهُ لَا يَدْرِي أَيْنَ بَاتَتْ يَدُهُ». “তোমাদের কেউ যখন ঘূম থেকে উঠে, তখন সে যেন তার হাত তিনবার না ধোয়া পর্যন্ত পাত্রে না ঢুকায়। কারণ সে জানেনা যে, তার হাত রাতে কোথায় ছিল।”

8- আমি একদা ‘আমর ইবনু আবূ হাসান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়েদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অযু সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। অতঃপর তিনি পানির একটি পাত্র আনতে বললেন। @অতঃপর তিনি তাঁদের (দেখাবার) জন্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অযুর মতো অযু করলেন।* তিনি পাত্রটি কাত করে উভয় হাতের উপর পানি ঢেলে তিনবার তা ধুয়ে ফেলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকালেন এবং তিন আঁজলা পানি দিয়ে তিনবার করে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে তা ঝাড়লেন। অতঃপর পুনরায় পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তিনবার মুখমণ্ডল ধুলেন। অতঃপর পুনরায় পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত দু’-দু’বার ধুলেন। অতঃপর পুনরায় পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তাঁর উভয় হাত সামনে থেকে পেছনে নিয়ে মাসেহ করলেন। তারপর টাখনুসহ দুই পা ধুলেন।

25- ‘নিশ্চয় আমার উম্মাতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাদের ওযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে”। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তার চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে। অপর শব্দে সহীহ মুসলিমে বর্ণিত: “আমি আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ওযূ করতে দেখেছি, তিনি তার চেহারা ধোন এবং তার দুই হাতকে বোগলের কাছাকাছি পর্যন্ত ধোন তারপর সে তার দুই পাকে ধোন এমনকি পায়ের নলা পর্যন্ত উঁচা করেন। তারপর তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, “নিশ্চয় আমার উম্মাতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাদের ওযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তার চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে।” সহীহ মুসলিমে অপর শব্দে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, “(পরকালে) মু’মিনের অলংকার ততদূর হবে, যতদূর তার ওযূর (পানি) পৌঁছবে।”